জৈন দর্শন: স্যাদবাদ ও সপ্তভঙ্গিনয় - MCQ উত্তর ও ব্যাখ্যা
আপনার দেওয়া পাঠ্য এবং MCQ প্রশ্নাবলীর উপর ভিত্তি করে প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর ও তার সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা নিচে দেওয়া হলো। এছাড়াও, ভুল বিকল্পগুলির ব্যাখ্যাও যোগ করা হয়েছে। বিকল্পগুলি দুটি কলামে সাজানো হয়েছে:
১: 'নয়' বলতে জৈন দর্শনে কী বোঝানো হয়েছে?
ক) বস্তুর সামগ্রিক জ্ঞান | খ) বস্তুর সাপেক্ষ নিরূপণ বা আংশিক জ্ঞান |
গ) বস্তুর নিরপেক্ষ জ্ঞান | ঘ) বস্তুর একমাত্র সত্য জ্ঞান |
ব্যাখ্যা: জৈনমতে, 'নয়' হলো বস্তুর অনন্ত ধর্মের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট দৃষ্টিকোণ থেকে প্রাপ্ত আংশিক জ্ঞান।
ক) বস্তুর সামগ্রিক জ্ঞান: এটি ভুল, কারণ 'নয়' আংশিক জ্ঞানকে বোঝায়, সামগ্রিক জ্ঞানকে নয়। কেবল সর্বজ্ঞ পুরুষই সামগ্রিক জ্ঞান লাভ করতে পারেন।
গ) বস্তুর নিরপেক্ষ জ্ঞান: এটি ভুল, কারণ 'নয়' বস্তুর সাপেক্ষ নিরূপণকে বোঝায়, নিরপেক্ষ জ্ঞানকে নয়।
ঘ) বস্তুর একমাত্র সত্য জ্ঞান: এটি ভুল, কারণ 'নয়' একটি আংশিক সত্যকে প্রকাশ করে, একমাত্র সত্যকে নয়।
২: কার পক্ষে বস্তুর অসংখ্য গুণ বা ধর্মগুলিকে একাধারে জানা সম্ভব?
ক) সাধারণ মানুষের | খ) সীমিত জ্ঞানসম্পন্ন জীবের |
গ) কেবল সর্বজ্ঞ পুরুষের | ঘ) কোনো মানুষেরই নয় |
ব্যাখ্যা: পাঠ্য অনুযায়ী, কেবলমাত্র সর্বজ্ঞ পুরুষই তাঁর কেবলজ্ঞানের দ্বারা বস্তুর অসংখ্য গুণ বা ধর্মগুলিকে জানতে পারেন।
ক) সাধারণ মানুষের: এটি ভুল, কারণ সাধারণ মানুষের জ্ঞান সীমিত।
খ) সীমিত জ্ঞানসম্পন্ন জীবের: এটি ভুল, কারণ সীমিত জ্ঞানসম্পন্ন জীব বস্তুর সব গুণ একবারে জানতে পারে না।
ঘ) কোনো মানুষেরই নয়: এটি ভুল, কারণ সর্বজ্ঞ পুরুষ মানুষ হলেও তাঁর জ্ঞান অসীম।
৩: জৈনমতে 'নয়'কে কী ধরনের জ্ঞান বলা হয়?
ক) পূর্ণ জ্ঞান | খ) আংশিক জ্ঞান |
গ) মিথ্যা জ্ঞান | ঘ) সংশয়াত্মক জ্ঞান |
ব্যাখ্যা: 'নয়' হলো একটি বিশেষ দৃষ্টিকোণ থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান, যা বস্তুর সামগ্রিক জ্ঞান নয়, বরং আংশিক জ্ঞান।
ক) পূর্ণ জ্ঞান: এটি ভুল, কারণ 'নয়' পূর্ণ জ্ঞান নয়, এটি বস্তুর একটি বিশিষ্ট ধর্মের জ্ঞান।
গ) মিথ্যা জ্ঞান: এটি ভুল, কারণ যে দৃষ্টিকোণ থেকে জ্ঞানটি জ্ঞাত হয় সেই দৃষ্টিকোণ থেকে জ্ঞানটি যথার্থ।
ঘ) সংশয়াত্মক জ্ঞান: এটি ভুল, কারণ 'নয়' কোনো সংশয় নির্দেশ করে না, বরং একটি নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি থেকে প্রাপ্ত সত্যকে প্রকাশ করে।
৪: জ্ঞানের আপেক্ষিকতা বোঝানোর জন্য জৈনগণ কোন দৃষ্টান্ত ব্যবহার করেন?
ক) অন্ধ ও হাতির | খ) জল ও বরফের |
গ) সূর্য ও চাঁদের | ঘ) মাটি ও গাছের |
ব্যাখ্যা: পাঠ্যে অন্ধ ব্যক্তিদের হাতি দেখার দৃষ্টান্তের মাধ্যমে জ্ঞানের আপেক্ষিকতা ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
খ) জল ও বরফের: এটি ভুল, পাঠ্যে এমন কোনো দৃষ্টান্তের উল্লেখ নেই।
গ) সূর্য ও চাঁদের: এটি ভুল, পাঠ্যে এমন কোনো দৃষ্টান্তের উল্লেখ নেই।
ঘ) মাটি ও গাছের: এটি ভুল, পাঠ্যে এমন কোনো দৃষ্টান্তের উল্লেখ নেই।
৫: জৈনদের তর্কশাস্ত্রের মূল কথা কী?
ক) একত্ববাদ | খ) বহুত্ববাদ |
গ) স্যাদবাদ | ঘ) সন্দেহবাদ |
ব্যাখ্যা: স্যাদবাদ হলো জৈন তর্কশাস্ত্রের একটি মূল কথা, যা জ্ঞানের আপেক্ষিকতা নিয়ে আলোচনা করে।
ক) একত্ববাদ: এটি ভুল, জৈন দর্শন বহুত্ববাদী।
খ) বহুত্ববাদ: এটি জৈন দর্শনের একটি বৈশিষ্ট্য হলেও, তর্কশাস্ত্রের মূল কথা হিসেবে স্যাদবাদই বেশি প্রযোজ্য।
ঘ) সন্দেহবাদ: এটি ভুল, কারণ জৈন দর্শন সংশয়বাদী নয়।
৬: 'স্যাৎ' শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ কী?
ক) অবশ্যই | খ) হয়তো বা হতে পারে |
গ) কখনোই নয় | ঘ) নিশ্চিত |
ব্যাখ্যা: 'স্যাৎ' শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হলো 'হয়তো' বা 'হতে পারে', যদিও জৈনরা এটিকে নিছক সম্ভাবনার অর্থে ব্যবহার করেন না।
ক) অবশ্যই: এটি ভুল, কারণ 'স্যাৎ' নিশ্চিতি বোঝায় না।
গ) কখনোই নয়: এটি ভুল, কারণ 'স্যাৎ' অস্তিত্বের সম্ভাবনাকে নির্দেশ করে।
ঘ) নিশ্চিত: এটি ভুল, কারণ 'স্যাৎ' শব্দের অর্থ নিশ্চিত নয়, বরং আপেক্ষিকতা নির্দেশক।
৭: জৈন দার্শনিকগণ 'স্যাৎ' শব্দটিকে কোন অর্থে গ্রহণ করেননি?
ক) প্রকাশিত অবধারণ ভিন্ন অন্য অবধারণের সম্ভাবনা নির্দেশক | খ) প্রকাশিত অবধারণের নিছক সম্ভাবনা সূচক |
গ) প্রকাশিত অবধারণের আপেক্ষিকতা প্রকাশক | ঘ) প্রকাশিত অবধারণের সংশয় নির্দেশক |
ব্যাখ্যা: জৈন দর্শনে 'স্যাৎ' শব্দ প্রকাশিত অবধারণের নিছক সম্ভাবনা বা সংশয় সূচনা করে না।
ক) প্রকাশিত অবধারণ ভিন্ন অন্য অবধারণের সম্ভাবনা নির্দেশক: এটি সঠিক অর্থের একটি অংশ, তাই এটি ভুল বিকল্প নয়।
গ) প্রকাশিত অবধারণের আপেক্ষিকতা প্রকাশক: এটি সঠিক অর্থের একটি অংশ, তাই এটি ভুল বিকল্প নয়।
ঘ) প্রকাশিত অবধারণের সংশয় নির্দেশক: এটি ভুল, কারণ জৈন দর্শন সংশয়বাদী নয়।
৮: জৈন দর্শনকে সংশয়বাদী বলা যায় না কেন?
ক) তারা জ্ঞানের সম্ভাবনায় সন্দেহ করে না | খ) তারা পূর্ণজ্ঞানের সম্ভাবনায় বিশ্বাস করে |
গ) তারা সাধারণ জ্ঞানের সম্ভাবনায় সন্দিগ্ধ নয় | ঘ) উপরের সবকটি |
ব্যাখ্যা: জৈনগণ জ্ঞানের সম্ভাবনায় বিশ্বাস করেন এবং পূর্ণজ্ঞানের সম্ভাবনাতেও বিশ্বাস করেন, তাই তাদের সংশয়বাদী বলা যায় না।
ক, খ, গ): এই প্রতিটি বিকল্পই সঠিক কারণ, জৈন দর্শন সংশয়বাদী না হওয়ার কারণ হিসেবে পাঠ্যে উল্লিখিত।
৯: 'সপ্তভঙ্গিনয়' বলতে কী বোঝায়?
ক) সাতটি দার্শনিক মতবাদ | খ) সাত প্রকারের অবধারণ বা বাক্য |
গ) সাতটি বস্তুর গুণ | ঘ) সাতটি জ্ঞান লাভের পদ্ধতি |
ব্যাখ্যা: স্যাদবাদকে বোঝানোর জন্য জৈনগণ সাতটি পরামর্শ বা বাক্য প্রয়োগ করেন, যা সপ্তভঙ্গিনয় নামে পরিচিত।
ক) সাতটি দার্শনিক মতবাদ: এটি ভুল, সপ্তভঙ্গিনয় একটি একক দার্শনিক তত্ত্বের অংশ।
গ) সাতটি বস্তুর গুণ: এটি ভুল, সপ্তভঙ্গিনয় বস্তুর গুণ নয়, বরং জ্ঞানের প্রকাশভঙ্গি।
ঘ) সাতটি জ্ঞান লাভের পদ্ধতি: এটি ভুল, সপ্তভঙ্গিনয় জ্ঞান লাভের পদ্ধতি নয়, বরং প্রাপ্ত জ্ঞানের প্রকাশভঙ্গি।
১০: 'ভগবতীসূত্র' অনুযায়ী স্বয়ং মহাবীর কয়টি মূল ভঙ্গির উল্লেখ করেছেন?
ক) দুটি | খ) তিনটি |
গ) চারটি | ঘ) সাতটি |
ব্যাখ্যা: মহাবীর 'স্যাৎ অস্তি', 'স্যাৎ নাস্তি' এবং 'স্যাৎ অব্যক্তব্যম্' - এই তিনটি মূল ভঙ্গির উল্লেখ করেছেন।
ক, গ, ঘ): এই বিকল্পগুলি ভুল, কারণ মহাবীর তিনটি মূল ভঙ্গির উল্লেখ করেছেন।
১১: সপ্তভঙ্গিনয়ের মূল তিনটি ভঙ্গি কী কী?
ক) স্যাৎ অস্তি, স্যাৎ নাস্তি, স্যাৎ অব্যক্তব্যম্ | খ) স্যাৎ অস্তি, স্যাৎ নাস্তি, স্যাৎ অস্তি চ নাস্তি চ |
গ) স্যাৎ অব্যক্তব্যম্, স্যাৎ অস্তি চ অব্যক্তব্যম্ চ, স্যাৎ নাস্তি চ অব্যক্তব্যম্ চ | ঘ) স্যাৎ অস্তি চ নাস্তি চ, স্যাৎ অস্তি চ অব্যক্তব্যম্ চ, স্যাৎ নাস্তি চ অব্যক্তব্যম্ চ |
ব্যাখ্যা: এই তিনটি হলো সপ্তভঙ্গিনয়ের মৌলিক ভঙ্গি, যা থেকে বাকি ভঙ্গিগুলি উদ্ভূত হয়েছে।
খ, গ, ঘ): এই বিকল্পগুলিতে মূল ভঙ্গির সাথে মিশ্রিত ভঙ্গিও অন্তর্ভুক্ত, যা প্রশ্ন অনুযায়ী ভুল।
১২: 'স্যাৎ অস্তি চ নাস্তি চ' ভঙ্গিটি কী প্রকাশ করে?
ক) কোনো বস্তুর কেবল অস্তিত্ব | খ) কোনো বস্তুর কেবল অনস্তিত্ব |
গ) কোনো বস্তু একই সাথে বিদ্যমান ও অবিদ্যমান উভয়ই | ঘ) কোনো বস্তুর স্বরূপ অবক্তব্য |
ব্যাখ্যা: এই ভঙ্গিটি একই সাথে একটি বস্তুর সদর্থক ও নঞর্থক ধর্ম বা গুণের সহাবস্থান বোঝায়।
ক) কোনো বস্তুর কেবল অস্তিত্ব: এটি 'স্যাৎ অস্তি' ভঙ্গির ব্যাখ্যা।
খ) কোনো বস্তুর কেবল অনস্তিত্ব: এটি 'স্যাৎ নাস্তি' ভঙ্গির ব্যাখ্যা।
ঘ) কোনো বস্তুর স্বরূপ অবক্তব্য: এটি 'স্যাৎ অব্যক্তব্যম্' ভঙ্গির ব্যাখ্যা।
১৩: যখন পরস্পর বিরোধী গুণ একই সাথে বিবেচনা করা হয়, তখন কোন ভঙ্গিটি প্রয়োগ করা হয়?
ক) স্যাৎ অস্তি | খ) স্যাৎ নাস্তি |
গ) স্যাৎ অব্যক্তব্যম্ | ঘ) স্যাৎ অস্তি চ নাস্তি চ |
ব্যাখ্যা: পাঠ্যে উল্লেখ আছে যে, যদি কোনো পরামর্শে পরস্পর বিরোধী গুণের সম্বন্ধে একসাথে বিচার করা হয়, তবে সেই বিষয়ে 'অবক্তব্য' শব্দ প্রয়োগ করতে হয়।
ক, খ, ঘ): এই বিকল্পগুলি ভুল, কারণ এগুলি পরস্পর বিরোধী গুণের একত্র বিবেচনাকে নির্দেশ করে না।
১৪: 'স্যাৎ অস্তি চ অব্যক্তব্যম্ চ' ভঙ্গিটি কোন দুটি ভঙ্গির মিশ্রণ?
ক) প্রথম ও দ্বিতীয় | খ) প্রথম ও তৃতীয় |
গ) প্রথম ও চতুর্থ | ঘ) দ্বিতীয় ও তৃতীয় |
ব্যাখ্যা: এটি প্রথম প্রকার অবধারণ (স্যাৎ অস্তি) এবং চতুর্থ প্রকার অবধারণ (স্যাৎ অব্যক্তব্যম্)-এর সংমিশ্রণ।
ক, খ, ঘ): এই বিকল্পগুলি ভুল, কারণ এগুলি সঠিক মিশ্রণকে নির্দেশ করে না।
১৫: জৈনমতে, কোনো বস্তুর বর্ণনা করতে হলে সর্বোচ্চ কয়টি পরামর্শ ব্যবহার করা যেতে পারে?
ক) পাঁচটি | খ) ছয়টি |
গ) সাতটি | ঘ) আটটি |
ব্যাখ্যা: জৈনমতে 'নয়' বা শর্তাধীন পরামর্শের সংখ্যা সাত।
ক, খ, ঘ): এই বিকল্পগুলি ভুল, কারণ জৈনমতে পরামর্শের সংখ্যা সাতের বেশি হতে পারে না।
১৬: কোন দার্শনিক স্যাদবাদকে 'পাগলের প্রলাপ' বলে আখ্যায়িত করেছেন?
ক) রামানুজ | খ) কুমারিল ভট্ট |
গ) শঙ্করাচার্য | ঘ) বৌদ্ধ দার্শনিকগণ |
ব্যাখ্যা: শঙ্করাচার্য স্যাদবাদকে 'পাগলের প্রলাপ' বলেছেন, কারণ তাঁর মতে যা অবক্তব্য তা কিভাবে বলা যায়।
ক) রামানুজ: তিনি স্যাদবাদকে বিরোধাত্মক সিদ্ধান্ত হিসেবে অভিহিত করেছেন, কিন্তু 'পাগলের প্রলাপ' বলেননি।
খ) কুমারিল ভট্ট: তিনি সপ্তভঙ্গিনয়ের শেষ তিন প্রকার নয়কে অপ্রয়োজনীয় ও বাহুল্যমাত্র বলেছেন।
ঘ) বৌদ্ধ দার্শনিকগণ: তাঁরা স্যাদবাদকে বিরোধাত্মক সিদ্ধান্ত হিসেবে অভিহিত করেছেন।
১৭: মীমাংসা দার্শনিক কুমারিল ভট্টের মতে, সপ্তভঙ্গিনয়ের শেষ কয়টি ভঙ্গি অপ্রয়োজনীয় ও বাহুল্যমাত্র?
ক) দুটি | খ) তিনটি |
গ) চারটি | ঘ) পাঁচটি |
ব্যাখ্যা: কুমারিল ভট্ট মনে করেন, শেষ তিনটি ভঙ্গি (পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম) অপ্রয়োজনীয়, কারণ সেগুলি কেবল প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় নয়ের সঙ্গে চতুর্থ নয়ের সংমিশ্রণ।
ক, গ, ঘ): এই বিকল্পগুলি ভুল, কারণ কুমারিল ভট্টের সমালোচনা তিনটি ভঙ্গি নিয়ে ছিল।
১৮: সমালোচকদের মতে, স্যাদবাদ কেবল সাপেক্ষকে স্বীকার করে, কিসের অভাব রয়েছে?
ক) আংশিক সত্তার | খ) বহুত্ববাদের |
গ) নিরপেক্ষ সত্তার | ঘ) জ্ঞানের আপেক্ষিকতার |
ব্যাখ্যা: সমালোচকদের মতে, জৈনগণ কেবল সাপেক্ষকে স্বীকার করেন এবং নিরপেক্ষ সত্তা স্বীকার করেন না, যা স্যাদবাদের একটি দুর্বল দিক।
ক) আংশিক সত্তার: এটি ভুল, স্যাদবাদ আংশিক সত্তা স্বীকার করে।
খ) বহুত্ববাদের: এটি ভুল, বহুত্ববাদ জৈন দর্শনের একটি বৈশিষ্ট্য।
ঘ) জ্ঞানের আপেক্ষিকতার: এটি ভুল, স্যাদবাদ জ্ঞানের আপেক্ষিকতাকে স্বীকার করে।
১৯: জৈনগণ কিসে বিশ্বাস করেন যা সত্য, বিরোধশূন্য ও সংশয়শূন্য?
ক) সাধারণ জ্ঞানে | খ) অনুমান জ্ঞানে |
গ) কেবলজ্ঞানে | ঘ) প্রত্যক্ষ জ্ঞানে |
ব্যাখ্যা: জৈনগণ কেবলজ্ঞানে বিশ্বাস করেন, যা তাদের মতে সত্য, বিরোধশূন্য ও সংশয়শূন্য।
ক) সাধারণ জ্ঞানে: এটি ভুল, সাধারণ জ্ঞান আংশিক ও সাপেক্ষ।
খ) অনুমান জ্ঞানে: এটি ভুল, অনুমান জ্ঞানও সাপেক্ষ হতে পারে।
ঘ) প্রত্যক্ষ জ্ঞানে: এটি ভুল, প্রত্যক্ষ জ্ঞানও আংশিক হতে পারে।
২০: কোন শতকের দিগম্বর জৈন দার্শনিক অনন্তবীর্য তাঁর 'পরীক্ষামুখপঞ্জিকা বা প্রমেয়রত্নমালা' গ্রন্থে সপ্তভঙ্গির ব্যাখ্যা করেছেন?
ক) অষ্টম শতক | খ) নবম শতক |
গ) দশম শতক | ঘ) একাদশ শতক |
ব্যাখ্যা: পাঠ্যে উল্লেখ আছে যে, একাদশ শতকের দিগম্বর জৈন দার্শনিক অনন্তবীর্য তাঁর 'পরীক্ষামুখপঞ্জিকা বা প্রমেয়রত্নমালা' গ্রন্থে সপ্তভঙ্গির ব্যাখ্যা করেছেন।
ক, খ, গ): এই বিকল্পগুলি ভুল, কারণ পাঠ্যে সঠিক শতকটি উল্লেখ করা আছে।
২১: 'স্যাৎ' শব্দটি দ্বারা কোনো অবধারণের কী প্রকাশ করা হয়?
ক) নিছক সম্ভাবনা | খ) সংশয় |
গ) আপেক্ষিকতা ও অন্য অবধারণের সম্ভাবনা | ঘ) নিশ্চিত সত্যতা |
ব্যাখ্যা: জৈন দর্শনে 'স্যাৎ' শব্দটি প্রকাশিত অবধারণের আপেক্ষিকতাকে যেমন প্রকাশ করে, তেমনি আবার অন্য অবধারণের সম্ভাবনাকেও প্রকাশ করে।
ক) নিছক সম্ভাবনা: এটি ভুল, কারণ জৈনরা 'স্যাৎ'কে নিছক সম্ভাবনার অর্থে গ্রহণ করেননি।
খ) সংশয়: এটি ভুল, কারণ জৈন দর্শন সংশয়বাদী নয়।
ঘ) নিশ্চিত সত্যতা: এটি ভুল, কারণ 'স্যাৎ' আপেক্ষিক সত্যতা নির্দেশ করে, নিশ্চিত সত্যতা নয়।
২২: জৈন দর্শনে 'নয়া-ভাস' বলতে কী বোঝায়?
ক) সঠিক জ্ঞান | খ) আংশিক জ্ঞান |
গ) মিথ্যা 'নয়' বা নয়া-ভাস | ঘ) পূর্ণ জ্ঞান |
ব্যাখ্যা: পাঠ্যে বলা হয়েছে, কোনো পরামর্শ করার সময় যদি ঐকান্তিকভাবে করা হয় এবং আপেক্ষিকভাবে করা না হয় তাহলে সেই পরামর্শ মিথ্যা 'নয়' বা নয়া-ভাস।
ক) সঠিক জ্ঞান: এটি ভুল, কারণ 'নয়া-ভাস' মিথ্যা জ্ঞান।
খ) আংশিক জ্ঞান: এটি ভুল, 'নয়' আংশিক জ্ঞান, কিন্তু 'নয়া-ভাস' মিথ্যা।
ঘ) পূর্ণ জ্ঞান: এটি ভুল, কারণ 'নয়া-ভাস' পূর্ণ জ্ঞান নয়।
২৩: 'পরীক্ষামুখপঞ্জিকা' বা 'প্রমেয়রত্নমালা' গ্রন্থটি কে রচনা করেন?
ক) কুন্দকুন্দাচার্য | খ) উমাস্বাতি |
গ) সমন্তভদ্র | ঘ) অনন্তবীর্য |
ব্যাখ্যা: একাদশ শতকের দিগম্বর জৈন দার্শনিক অনন্তবীর্য এই গ্রন্থটি রচনা করেন।
ক) কুন্দকুন্দাচার্য: তিনি 'নিয়মসার', 'পঞ্চাস্তিকায়সার' ইত্যাদি গ্রন্থ রচনা করেন।
খ) উমাস্বাতি: তিনি 'তত্ত্বার্থসূত্র' বা 'তত্ত্বার্থাধিগমসূত্র' রচনা করেন।
গ) সমন্তভদ্র: তিনি 'গন্ধহস্তিমহাভাষ্য', 'আপ্তমীমাংসা' ইত্যাদি গ্রন্থ রচনা করেন।
২৪: কোন দার্শনিক বলেছেন যে, যদি সকল বস্তুই সম্ভবমাত্র হয়, তবে স্যাদবাদ স্বয়ংই সম্ভবমাত্র হয়ে যাবে?
ক) রামানুজ | খ) শঙ্করাচার্য |
গ) কুমারিল ভট্ট | ঘ) বেদান্তী দার্শনিকগণ |
ব্যাখ্যা: বেদান্তী দার্শনিকদের মতে, এই সমালোচনাটি স্যাদবাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত হয়েছে।
ক) রামানুজ: তিনি স্যাদবাদকে বিরোধাত্মক সিদ্ধান্ত হিসেবে অভিহিত করেছেন।
খ) শঙ্করাচার্য: তিনি স্যাদবাদকে 'পাগলের প্রলাপ' বলেছেন।
গ) কুমারিল ভট্ট: তিনি সপ্তভঙ্গিনয়ের শেষ তিন প্রকার নয়কে অপ্রয়োজনীয় বলেছেন।
২৫: জৈনমতে বস্তুর অনন্ত গুণ স্বীকার করা হলেও, এই গুণগুলি কিসের উপর নির্ভর করে না?
ক) জ্ঞাতা বা দ্রষ্টার উপর | খ) স্থান ও কালের উপর |
গ) মনের উপর | ঘ) উপরের সবকটি |
ব্যাখ্যা: জৈনমতে বস্তুর অনন্ত গুণ স্বীকার করা হয়। এই গুণ দ্রষ্টা বা জ্ঞাতার উপর নির্ভর করে না, কিন্তু গুণগুলির স্বতন্ত্র সত্তা আছে।
ক, খ, গ): এই প্রতিটি বিকল্পই সঠিক কারণ, পাঠ্যে বলা হয়েছে যে জ্ঞেয় বস্তু জ্ঞানের উপর বা জ্ঞাতার মনের উপর আদৌ নির্ভরশীল নয়।